শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন

জেএমবি সন্দেহে আটক দুই যুবক জেল থেকে মুক্তির পর নিখোঁজ, ছেলেকে ফিরে পেতে বাবার সংবাদ সম্মেলন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: বেকসুর খালাস পাওয়ায় জেল থেকে মুক্তির পর কারাফটকের সামনে থেকে নিখোঁজ হয়েছে লালমনিরহাটে জেএমবি সন্দেহ গ্রেফতার হওয়া জামাল উদ্দিন ও মেহেদী হাসান নামে দুই যুবক। তিনদিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও তাদের কোন খোঁজ পায়নি তাদের পরিবার। পরে তাদের পরিবার নিখোঁজ দুই যুবককে ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলন করে।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের হল রুমে ছেলে মেহেদীকে ফিরে পেতে বাবা আব্দুল লতিফ ও ভাই জামাল উদ্দিনকে ফিরে পেতে বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ সংবাদ সম্মেলন করে। গত ২১শে ফেব্রুয়ারী জেল থেকে বাহির হওয়ার পর পরই জেল গেট থেকে তারা নিখোঁজ হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানা যায়, লালমনিরহাটে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ০১/২০১৮ এর রেফ:জিআর নং.২৩৪/২০১৭(হাতি),হাতিবান্ধা পিএস নং ৩৪(০৮)২০১৭ এর মামলায় বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক মোঃ মিজানুর রহমান সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত প্রমানিত না হওয়ায় চলতি বছরের গত ১৯ ফেব্রুয়ারী মোঃ মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসান, জামাল উদ্দিনসহ চারজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। রায়ে খালাস প্রাপ্ত জেলহাজতে থাকা মোঃ মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসান ও জামাল উদ্দিন জেল থেকে বের হওয়ার পরপরই নিখোঁজ হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মোঃ মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসানের বাবা আব্দুল লতিফ ও জামাল উদ্দিনের ভাই আবুল কালাম আজাদ লিখিত বক্তব্য উল্লেখ করে জানান, রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় খালাসপ্রাপ্ত মোঃ মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসান ও জামাল উদ্দিন লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে জেল গেট থেকে বের হওয়ার পর গেটের পূর্বে মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কালো গ্লাস সম্বলিত একটি সাদা মাইক্রোবাসে মাস্ক পরিহিত ৮/৯ জন ব্যক্তি জোর করে দুজনকে ধরে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুই যুবকের পরিবারের লোকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বিষয়টি জামাল ও মেহেদীর বাড়ীর লোকজন জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষের নিকট জানতে চাইলে তারা আসামীরা ছাড়া পাবার পর কে কাকে কোথায় নিয়ে গেছে সেটি জানা নেই বলে জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে মোঃ মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসানের বাবা বলেন, আমার ছেলেকে খুঁজতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু তাকে আর পাওয়া যায়নি। এসময় তিনি বলেন, গত বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে লালমনিরহাট পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করলে আমার ছেলে মোঃ মেহেদী ওরফে মেহেদী হাসান কোথায় আছে সেটি জানেন না বলে পুলিশ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০০৯ সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ১৪ বছর দুই হাজার টাকা, ২০০৯, সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ১৪ বছর দুই হাজার টাকা ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে ১৪ বছর দুই হাজার টাকা করে মোট তিন মামলায় দুইজনকে ৪২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় চারজনকে বেকসুর খলাস দেন বিজ্ঞ আদালত। এই চারজনের মধ্যে জামাল উদ্দিন ও মেহেদী হাসান ছিলেন।

পরবর্তীতে নব প্রভাতের মুয়াজ্জিন মেহেদী হাসান মিশান, হাসানুল বান্না, জামাল উদ্দীন, নাহিদ হাসান ও মো. মেহেদীকে আটক করে তাদের ১৬১ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন পুলিশ।

রায়ে বলা হয় যে রাষ্ট্রপক্ষ ফৌজদারী কার্যিবধি ৩৪২ ধারায় আসামিগণের বিরুদ্ধে ১৭ জন সাক্ষীর বক্তব্য রেকর্ড করেন আদালতে। তাতেই মূলত প্রমাণিত হয় আসামি দুইজন নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনগুলোর সক্রিয় সদস্য এবং অন্য চারজনের জঙ্গী সংগঠনের সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই। তাই বিজ্ঞ আদালত বাকী চারজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com